আজ: শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০২ জুন ২০২৩, শুক্রবার |

kidarkar

বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে শব্দ গোলাযোগ, বিরক্ত মন্ত্রীরাও

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট নিয়ে বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২ জুন) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তবে সংবাদ সম্মেলনে শব্দ গোলযোগের কারণে তা যেন একেবারেই ভেস্তে যাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। এ ঘটনায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে থাকা অন্যান্য মন্ত্রীরা।

আনুমানিক দুপুর সোয়া ৩টার দিকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মঞ্চে ওঠেন। শুরু থেকেই টুকটাক শব্দ গোলযোগ তৈরি হচ্ছিল। অনেক সময়ই ঠিকঠাকভাবে শব্দ শোনা যাচ্ছিল না। শব্দ ডুপ্লিকেট হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছিল। তেমনিভাবে প্রায় ৪০ মিনিটের মতো সংবাদ সম্মেলন চলে।

এরপর একেবারেই শব্দ গোলযোগে তৈরি হলে টেলিভিশন ক্যামেরা পার্সনরা শব্দ শুনতে না পেয়ে মঞ্চের এগিয়ে যান। এতে কিছুটা বিশৃঙ্খলার তৈরি হয়। পরে মন্ত্রীরা এই শব্দ গোলযোগ ঠিক করার জন্য ১০ মিনিট সময় নেন।

এসময় বিভিন্ন মন্ত্রী মাইকে বলতে থাকেন, শব্দ নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত যারা তারা যেন খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি ঠিক করে। এই কথা সোয়া তিনটা থেকে প্রায় তিনটা ৫০ মিনিট পর্যন্ত প্রায় সময় বলছিলেন তারা।

এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এর আগেও এই হলে এমন সমস্যা হয়েছে। এমনটা কেন হয় তা খতিয়ে দেখতে হবে।

পরে ৩টা ৫৭ মিনিটের দিকে শব্দ গোলযোগ ঠিক করা হয়। এরপর ৪টা ১৫ মিনিটে অর্থমন্ত্রী জানান, সাংবাদ সম্মেলনের সাউন্ড সিস্টেম ঠিক হয়েছে। পরে সাংবাদিকদের কাছে থেকে প্রশ্ন নিয়ে আবারও সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।

শব্দ প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভাইব্রেশন জটিলতায় সাউন্ড রিপিট হচ্ছিল ও মাঝে মাঝে কম শোনা যাচ্ছিল।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১ জুন) ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ শিরোনামে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিকেল ৩টায় তিনি ডিজিটাল উপস্থাপনার মাধ্যমে বাজেট পেশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করা হয়। তারপর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বাজেটে সম্মতি জানিয়ে সই করেন।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ।

প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ঠিক করা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ।

বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।

ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হবে এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে এক লাখ দুই হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।

অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ নেওয়া হবে ব্যাংক খাত থেকে। যার পরিমাণ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এছাড়া সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে ৫ হাজার ১ কোটি টাকা নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।

এবারের বাজেট আওয়ামী লীগ সরকারের ২৩তম আর বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেট আগামী ২৬ জুন অনুমোদন করা হবে। তার আগে বাজেট নিয়ে সংসদে ৪০ ঘণ্টা আলোচনা হবে। ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে। নতুন অর্থবছর চলবে নতুন বাজেটের বরাদ্দ ও পরিকল্পনা অনুযায়ী।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.