আজ: মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪ইং, ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৩ জুন ২০২৩, শনিবার |

kidarkar

কসমেটিক্স ইন্ডাস্ট্রি বিকাশে সম্পুরক শুল্ক বড় হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্ভাবনাময় দেশিয় কসমেটিক্স শিল্পখাতের বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সম্পূরক ভ্যাট। এই খাতে সম্পূরক ভ্যাট থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে স্থানীয় বিনিয়োগ। বাণিজ্য মণÍ্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন এই শিল্পের বিকাশে সহায়ক নীতি প্রণয়নে জোরালে সুপারিশ করলেও তা উপেক্ষিত রয়ে গেছে। ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশকে গুরুত্ব না দেয়া স্থানীয় শিল্পের জন্য নেতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরাও।
জানা যায়, একটা সময়ে বাংলাদেশে কসমেটিক্স খাত ছিল আমদানি ও লাগেজ নির্ভর। তাতে মানহীন পণ্য দেদারসে দেশে ঢুকতো। এতে করে ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তেন। ত্বকের নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টির জন্য ভেজাল ও মানহীন কসমেটিকস পণ্য দায়ি হলেও তার যথাযথ তদারকি না থাকায় ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে এসেছেন। তাদের উৎসাহিত করার বদলে নিরুৎসাহিত করাই কি তবে সম্পূরক শুল্কারোপের লক্ষ্য?-এমন প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের।
বর্তমানে সম্পুর্ন আমদানি নির্ভর এই খাতের বাজার মূল্য প্রায় ২১ হাজার ৫শত কোটি টাকা। আমদানি নির্ভর এই শিল্পের পণ্য সমূহ দেশে উৎপাদিত হলে আমদানি বিকল্প পণ্য হিসেবে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। বর্তমানে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পুরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্যের তালিকায় রয়েছে, ওষ্ঠাধার প্রসাধন, চক্ষু প্রসাধন, হাত, নখ বা পায়ের প্রসাধন, পাউডার, সুগন্ধযুক্ত বাথ সল্ট এবং অন্যান্য গোসল সামগ্রীসহ সংশ্লিষ্ট প্রসাধন সামগ্রী।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও এনবিইআর এর চেয়ারম্যান প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ বলেন, কসমেটিক্স শিল্পে আরোপিত সম্পূরক ভ্যাট স্থানীয় শিল্পের জন্য বৈষম্যের কারণ হবে। এই শিল্পের বাজার এখন প্রায় ৩শ’ কোটি ডলারের। বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধির হার সাড়ে ১২ শতাংশ। তাই দেশীয় শিল্পে বিনিয়োগ আকর্ষণে নীতি সহায়তা জরুরী। দেশীয় উৎপাদন ও উদ্যোগকে এগিয়ে রাখতে আমদানীতে শুল্কহার বাড়ানো উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
লাইট ক্যাসেল পার্টনারস এবং অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চের মতো গবেষণা সংস্থাগুলোর ভাষ্যমতে, বাংলাদেশের স্কিন কেয়ার বা পারসোনাল কেয়ার শিল্পের আনুমানিক বাজারের আকার ২০২০ সালে ছিল ১ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার। ২০২৭ সালের মধ্যে এর আকার ২ দশমিক ১২ বিলিয়নে পৌঁছাবে বলে আশা করছে তারা। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ৮ দশমিক ১ শতাংশ হারে এই শিল্প বৃদ্ধি পাবে।
এ খাতের প্রস্তাবিত সংগঠন এসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার এন্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স বাংলাদেশ এর সভাপতি আশরাফুল আম্বিয়া জানান, আমদানি বিকল্প দেশিয় শিল্পের বিকাশ ঘটলে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় ঘটে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। উপরন্তু, রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। তাই নীতিনির্ধারণে অগ্রাধিকার তালিকায় শীর্ষে থাকা উচিত স্থানীয় বিনিয়োগ সুরক্ষা। তিনি বলেন, বর্তমানে কতিপয় মানহীন ও ভেজাল পণ্যের ছড়াছড়ির খবর প্রায়শই দেখা যায়। এসব ভেজাল পণ্য ব্যবহার করে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন। পড়ে যাচ্ছেন বড় ধরণের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। তাই স্থানীয় উৎপাদনকে নীতি সহায়তা দিয়ে মানসম্মত পণ্য ক্রেতাদের জন্য সুলভ করা জরুরী।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.