আজ: সোমবার, ০৬ মে ২০২৪ইং, ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার |

kidarkar

ব্র্যাক ব্যাংক চট্টগ্রাম রিডিং ক্যাফে-তে বিশ্বজিৎ চৌধুরীর উপন্যাস ‘নার্গিস’ নিয়ে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা, রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩: সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংক চট্টগ্রাম রিডিং ক্যাফের সদস্যরা বিশ্বজিৎ চৌধুরীর মনোমুগ্ধকর উপন্যাস ‘নার্গিস’ নিয়ে এক সাহিত্যসভার আয়োজন করে। প্রখ্যাত কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী সৈয়দা খাতুন ‘নার্গিস’ নামে পরিচিত ছিলেন। উপন্যাসটিতে এই সৈয়দা খাতুন, অর্থাৎ নার্গিসের জীবনকে শৈল্পিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

এই উপন্যাসে নজরুল এবং নার্গিসের মধ্যে থাকা রহস্যময় সম্পর্কের গল্প তুলে ধরা হয়েছে, যা তাঁদের বিয়ের রাতে তাঁদের আকস্মিক বিচ্ছেদ থেকে শুরু হয়েছিল। তাঁদের বিচ্ছেদের বহু বছর পর নার্গিসকে লেখা নজরুলের একটি মর্মস্পর্শী চিঠিকে কেন্দ্র করে সুনিপুণভাবে এই আখ্যানটি নির্মাণ করেছেন বিশ্বজিৎ চৌধুরী। এই চিঠিকে উপন্যাসের ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে বেছে নিয়ে এটিকে ঘিরে লেখক প্রেম, ত্যাগ এবং সহনশীলতার গল্প বুনেছেন।

আলোচনার সময় উপন্যাসটি রচনায় নিজের অনুপ্রেরণার বিষয়ে বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, “স্কুলের একটি অনুষ্ঠানে ‘নার্গিসের কাছে নজরুলের চিঠি’ আবৃত্তি শুনে এই নারীর সম্পর্কে আমার কৌতূহল সৃষ্টি হয়। এরপর সেই কৌতূহল আর কখনো ম্লান হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়নি। কবি নজরুলের জীবন ও সাহিত্য তুলনামূলকভাবে সহজবোধ্য হলেও অস্পষ্টতায় আচ্ছন্ন নার্গিস নামের এক তরুণীকে কে চিনবে? অনেক বছর ধরে তাকে নিয়ে গবেষণা করে অবশেষে ‘নার্গিস’ উপন্যাসটি লিখলাম। এতে প্রেম ও বলিদানে ভরা এবং ক্ষয়ে ক্ষয়ে স্বর্ণোজ্জ্বল হয়ে ওঠা একজন নারীর জীবন চিত্রিত করার চেষ্টা করেছি আমি।”

রিডিং ক্যাফেতে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের মতামত তুলে ধরে বলেন যে, নজরুল ও নার্গিসের সম্পর্ক শুধু রহস্যময়ই নয়, কৌতূহলোদ্দীপকও বটে। ইতিহাসের এই অধ্যায়ের বর্ণনামূলক ব্যাখ্যার জন্য তারা লেখক বিশ্বজিৎ চৌধুরীর প্রশংসা করেন। একজন নিবেদিতপ্রাণ গবেষক ও ঐতিহাসিকের সততা নিয়ে বিশ্বজিৎ চৌধুরী গল্পটিকে একটি প্রাণবন্ত ও চিত্রময় রূপ দিয়েছেন। উপন্যাসে চিত্রিত ঘটনাগুলোর একটি বিশ্বাসযোগ্য এবং সুসঙ্গত ক্রম তৈরির লক্ষ্যে এর সত্যতা বজায় রেখে ঘটনার তারিখ এবং বর্ণিত তথ্যগুলো সংমিশ্রণ করতে পারার চ্যালেঞ্জ নিয়ে সাহিত্যসভার আলোচকরা লেখকের প্রশংসা করেন। ঘটনা যেখানে শেষ হয়, সেখানে কল্পনার মাধ্যমে গল্পকে প্রসারিত করার ক্ষেত্রে লেখকের দক্ষতারও প্রশংসা করেছেন তারা।

রিডিং ক্যাফের সাহিত্যসভাটি একটি চমৎকার প্রশ্নোত্তর পর্বের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছিল, যেখানে উৎসাহী পাঠকরা লেখকের সাথে উপন্যাসের বিষয়গত উপাদানের পাশাপাশি নজরুল ও নার্গিসকে ঘিরে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের আরো গভীরে অনুসন্ধান করেন।

চট্টগ্রাম রিডিং ক্যাফের সদস্যরা এরকম একটি জ্ঞানগর্ভ এবং সমৃদ্ধ সাহিত্যসভার আয়োজন করতে পেরে গর্বিত, যা পাঠ ও বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনার সংস্কৃতি গড়ে তোলার ব্যাপারে তাদের অঙ্গীকারকে তুলে ধরে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.