আজ: রবিবার, ০৫ মে ২০২৪ইং, ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার |

kidarkar

আদালত প্রাঙ্গণে ককটেল হামলার মূল পরিকল্পনাকারী মুকিত গ্রেফতার

শেয়ারবাজার ডেস্ক : ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে ককটেল হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বোমা বিশেষজ্ঞ মুকিত ওরফে বোমা মাওলানাকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) পুরান ঢাকার চকবাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবির লালবাগ বিভাগ।

ডিবি জানায়, গত ২৭ অক্টোবর থেকে গত ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রেফতার বোমা মাওলানা গান পাউডার সংগ্রহ করে প্রায় ৪০০ বোমা তৈরি করে। পরে এসব বোমা সে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সাপ্লাই করে। বোমা বানাতে গান পাউডার সাপ্লাই দেয় যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। নাশকতা কিংবা আগুন দেওয়া ছবি লন্ডন পাঠানো হলে তাদের পুরস্কৃত করা হতো। বোমা মাওলানার সাপ্লাই করা বোমার মধ্যে একটি বোমা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিস্ফোরণ করা হয়।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, আমরা অনেক দিন ধরে মুকিত হোসাইন ওরফে বোমা মাওলান খুঁজছিলাম। তার নাম হলো মুকিত তবে সবাই তাকে ডাকে বোমা মাওলানা নামে। এক সময় সে আলিয়া মাদরাসার ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও সভাপতি ছিল। পরবর্তীতে সে ছাত্রদল মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। ২০১৩-১৪ সালে বোমা বানাতে গিয়ে তার ডান হাতের কব্জি উড়ে যায়। এরপর থেকে তার নাম হয় বোমা মাওলানা। দলীয় আনুগত্য ও উগ্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তাকে মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত করে স্বয়ং তারেক জিয়া।

হারুন অর রশীদ বলেন, মহানগর জজ কোর্ট প্রাঙ্গনে যে বোমাটি বিস্ফোরিত হয়েছে ছিলো সেটার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বোমা মাওলানা। ২৭ অক্টোবর রাতে মতিঝিল ব্যাংক কলোনিতে যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পাঠানো ১০ কেজি গান পাউডার বোমা মাওলানা রিসিভ করে ভাটারা থানার যুবদলের আহবায়ক রবিউল ইসলাম নয়নের কাছ থেকে। এই গান পাউডার দিয়ে গত ২৭ অক্টোবর থেকে গত ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কয়েক দফায় প্রায় চারশত হাত বোমা তৈরি করে সে। পরে এসব বোমা সাপ্লাই দেওয়া হয় বিভিন্ন থানা যুবদলের আহবায়ক ও সদস্য সচিবদেরকে। তার সরবরাহ করা হাত বোমা থেকে একটি হাত বোমা যুবদলের সদস্য সোহেল খান ও অভি আজাদ চৌধুরীর নির্দেশে ঢাকা মহানগর জজ কোট আদালতের প্রাঙ্গনে বিস্ফোরিত করে ওয়ারীর আব্দুল হামিদ ভূঁইয়া ও তার স্ত্রী হাফসা আক্তার।

জিজ্ঞাসাবাদে মুকিত ওরফে বোমা মাওলানা ডিবিকে জানায়, প্রতিটি যানবাহনে আগুন দেয়ার জন্য আগুন দাতাদেরকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এছাড়া বিস্ফোরণ ঘটানো ও মশাল মিছিলের জন্য দেওয়া হয় ৫ হাজার টাকা করে মহানগর যুবদলের পক্ষ থেকে। এছাড়া ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সে প্রায় ৬-৭ হাজার লোকের মিছিল নেতৃত্ব দিয়েছে বোমা মাওলানা।

ডিবিপ্রধান আরও জানান, নাশকতার জন্য যারা বোমা বানায় এবং বাস ও ট্রেনে যারা নাশকতা করে তাদের অনেকের নাম পেয়েছি। এই বোমা মাওলানা ২৭ অক্টোবর একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আর সেখানে বসে তিনি পরিকল্পনা করছিলেন কোথা থেকে বোমা বানানোর সরঞ্জাম সংগ্রহ করা যায় আর কাকে দিয়ে এসব বোমা বিস্ফোরিত করে কাকে পঙ্গু করা যায়।

তিনি বলেন, লন্ডন থেকে আসা নির্দেশে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক/ ভীতি ছড়ানোর কাজে ঢাকা মহানগর যুবদল দক্ষিণে ৮টি টিম গঠন করা হয়। মুকিতের দায়িত্ব ছিলো কেন্দ্রীয় যুবদল ও মহানগর যুবদলের সঙ্গে সমন্বয় করা। সমন্বয় করে বোমা বানিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো। এছাড়া গ্রেফতার মুকিত ওয়ার্ড এবং থানা পর্যায়ের যুবদলের কর্মীদেরকে দিয়ে যানবাহনে আগুন দেয়ার কমপক্ষে ৬টি ঘটনার সমন্বয় করেছে। আমরা তার কাছ থেকে আমরা অনেক তথ্য পেয়েছি।

এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেফতার বোমা মাওলানা যুবদলের কর্মীদেরকে শিখিয়ে দিত কীভাবে আগুন লাগাতে হবে। আর তাদেরকে সে বলত তার বলা কায়দায় যদি আগুন লাগানো হয় সেই ছবি যদি লন্ডনে পাঠানো হয় তাহলে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে।

যুবদল সভাপতি টুকুকে গ্রেফতারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হারুন বলেন, তাকে গ্রেফতারের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.