আজ: শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৩ মার্চ ২০২৪, শনিবার |

kidarkar

ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর

অধিকাংশ কোম্পানি শেয়ারে মন্দা, দুর্বলদের বাজিমাত

নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘ ১০ মাসেরও বেশি সময় পর গত ১৮ জানুয়ারি ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরপর ২১ জানুয়ারি থেকে ৩৫টি কোম্পানি বাদে বাকি সব কোম্পানির শেয়ার স্বাভাবিক লেনদেনে ফিরে।

গত দুই মাসে কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৭০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে। এর মধ্যে কিছু দুর্বল কোম্পানির শেয়ারদরের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়েছে। পাশাপাশি নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামও বেড়েছে। এর মধ্যে ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানি সিকদার ইন্সুরেন্সের শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ২৩৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

তালিকাভুক্তির প্রথম দিন ২৪ জানুয়ারি কোম্পাটির শেয়ার দর ছিল ১১ টাকা, যা ২০ মার্চ ৩৬ টাকা ৯০ পয়সায় পৌঁছায়। এ সময়ের ব্যবাধানে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২৫ টাকা ৯০ পয়সা বা ২৩৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। দর বৃদ্ধিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে একই ক্যাটাগরির আরেক কোম্পানি এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের শেয়ার। ৬ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়। ওই সময় দর ছিল ২২ টাকা, যা ২০ মার্চ ৪১ টাকা ১০ পয়সায় পৌঁছায়। অর্থাৎ দুই সপ্তাহে কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ১৯ টাকা ১০ পয়সা বা ৮৬ দশমিক ৮১ শতাংশ।

দর বৃদ্ধিতে পরের অবস্থানে রয়েছে আফতাব অটোমোবাইলসের শেয়ার। ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার পরের দুই মাসে (২১ জানুয়ারি থেকে ২০ মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৬৯ দশমিক ২৮ শতাংশ। এছাড়া একই সময়ে দর বৃদ্ধি পাওয়া অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সেন্ট্রাল ফার্মার শেয়ার ৬৪ দশমিক ৪০ শতাংশ, পিপলস লিজিং ফাইন্যান্সের ৫৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ, সিটি জেনারেল ইন্সুরেন্সের ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ দর বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ারদর বেড়েছে ফুয়াং সিরামিক, সেন্ট্রাল ইন্সুরেন্স, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ এবং লভেলো আইক্রিমের। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে কেবল ফাইন ফুডসের শেয়ার দর বেড়েছে ৩১ দশমিক ২৪ শতাংশ। ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডায়িং, মালেক স্পিনিং, আনলিমা ডায়িং, জুট স্পিনিং ও ওমিক্স ইলেকট্রোডের শেয়ার। এছাড়া ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে ১৫টির এবং ১০ শতাংশের কম দর বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৬ কোম্পানির শেয়ার।

অপরদিকে, ঢালাওভাবে দরপতনে ৭০ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর বাড়লেও ৩২৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের দরপতন হয়েছে। এরমধ্যে ৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশের আশেপাশে, ৮টির দাম কমেছে ৪০-৪৫ শতাংশ, ২৫টির দাম কমেছে ৩০-৪০ শতাংশ, ৮৪টির দাম কমেছে ২০-৩০ শতাংশ, ১১০টির দাম কমেছে ১০-২০ শতাংশ এবং ১০ শতাংশের কম দাম কমেছে ৯৪টির। সবচেয়ে বেশি দুর্দশায় পড়েছে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের বিনিয়োগকারীরা। গত দুই মাসে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ৫২.৫৬ শতাংশ।

দরপতনে শীর্ষে থাকা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জিএসপি ফাইন্যান্সের ৫২.১৪ শতাংশ, রিং সাইন টেক্সটাইলের ৪৭.৯৬ শতাংশ, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ৪৬.০৩ শতাংশ, প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের ৪৫.৮৯ শতাংশ, ফনিক্স ফাইন্যান্সের ৪৫.১৭ শতাংশ।

৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত দরপতন হয়েছে-ম্যাকসন্স স্পিনিং, বে লিজিং ফাইন্যান্স, রিজেন্ট টেক্সটাইল, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এমএল ডায়িং, জেএমআই মেডিকেল ডিভাইস, এসিআই লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ল্যাম্পস লিমিটেডের।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে দীর্ঘদিন আটকে থাকা শেয়ার বিক্রি করে পুঁজি সংগ্রহ করার প্রবণতা ছিল বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। এক্ষেত্রে লাভ-ক্ষতির বিবেচনা না করেও শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে। ফলে অধিকাংশ কোম্পানির দরপতন হয়েছে এবং বাজারে দুর্বল কোম্পানিগুলোর অধিকহারে দর বৃদ্ধি একটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা। এমন অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বাজার বিমুখ হচ্ছে। বাজারের অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন অনিয়ম দূরীকরণে কঠোর হওয়া উচিত নিয়ন্ত্রক সংস্থার।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.