আজ: রবিবার, ০৫ মে ২০২৪ইং, ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার কারসাজিতে হিরু গংদের গুরু পাপে লঘু শাস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত কয়েক বছরে পুঁজিবাজারে কারসাজিতে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় উঠে এসেছে আবুল খায়ের হিরুর নাম। যার সহযোগি হিসেবে তার পরিবারের সদস্যসহ অনেকে রয়েছেন। যারা বিভিন্ন সময় পুঁজিবাজারের উন্নতি করতে ও লেনদেন বাড়াতে সিরিজ ট্রেডিং করেছেন বলে শুনানিতে দাবি করেছেন বলে দাবি।

তবে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার নিয়ে আবুল খায়ের গং কোন অনিয়ম করেননি বলে কমিশনকে জানিয়েছেন। তারা স্বাভাবিক নিয়মে লেনদেন করেছেন। তাদের এই দাবি কমিশনের কাছে বিবেচনাযোগ্য হয়নি। যে কারণে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার কারসাজির দায়ে আবুল খায়ের হিরু গং চক্রকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে কমিশন। যেখানে তারা কারসাজিতে মুনাফা করেছে ২ কোটি ৮২ লাখ টাকা।

বিভিন্ন কোম্পানির ন্যায় আবুল খায়ের চক্রটি জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে। এই কারসাজিতে তারা ১৭ দিনের ব্যবধানে (১৬ মে – ১ জুন ২০২১) কোম্পানিটির শেয়ার দর বাড়ায় ৬৯ শতাংশ। এই দর বৃদ্ধিতে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস.এম পারভেজ তমালসহ আবুল খায়ের হিরুর সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত বলে ডিএসইর তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

জেনেক্স ইনফোসিস শেয়ার কারসাজিতে আবুল খায়ের হিরুর ৯টি বিও হিসাব থেকে ২০২১ সালের ১৫ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত সময়ে অনেক শেয়ার লেনদেন হয়েছে। তারা ওই সময়ে জেনেক্সের মোট লেনদেনের ১১.২২ শতাংশ শেয়ার লেনদেন করেন।

ওই ১৬ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত সময়ে আবুল খায়ের গ্রুপ জেনেক্সের ৩৫ লাখ ৬০ হাজার ১৮৫টি শেয়ার কিনেন। বিপরীতে বিক্রি করেন ১৩ লাখ ৯৩ হাজার ৫০টি। এই বিক্রি থেকে ৯২ লাখ টাকার রিয়েলাইজড গেইন করেন। এছাড়া আনরিয়েলাইজড গেইন দাড়াঁয় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

এভাবে মুনাফা করতে গিয়ে সিরিজ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে আবুল খায়ের চক্রটি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ এর ধারা ১৭(ই)ভি) ভঙ্গ করেছেন। এই বিষয়ে কারণ দর্শাতে ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর আবুল খায়ের ও তার সহযোগিদেরকে শুনানিতে তলব করা হয়। যাদের পক্ষে শুনানিতে বক্তব্য দেন আবুল খায়ের হিরু।

শুনানিতে আবুল খায়ের হিরু বলেন, ২০২১ সালের ১৬ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত সময়ে ৭১.২০ থেকে ৯২.৫০ টাকা দরকালীন মাত্র ১১.২২% শেয়ার লেনদেন করেছি। এটাই প্রমাণ যে আমরা ম্যানিপুলেশনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। আমরা মুনাফার জন্য ওই শেয়ার লেনদেন করেছি। এছাড়া আমার জানা মতে, সক্রিয় ও সঠিক শেয়ার লেনদেনে অংশগ্রহণে ওখানে কোন অনিয়ম হয়নি।

তিনি বলেন, সব বিনিয়োগকারীর উদ্দেশ্যে থাকে রিয়েলাইজড এবং আনরিয়েলাইজড গেইন করা। আমি যতদুর বুঝি, এটা কোন অন্যায় না। কিন্তু রিপোর্ট অনুযায়ি আমার গেইন প্রধানতম অন্যায়। যদি আমি লোকসান করতাম, তাহলে সবাই খুশি হতো এবং শাস্তি পেতাম না।

তার উপস্থাপিত বক্তব্যের মধ্যেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে কমিশন মনে করে। যে কারণে তার ব্যাখ্যা কমিশনের কাছে বিবেচনাযোগ্য হয়নি। এই পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারের উন্নয়ন, বাজারে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা রক্ষার স্বার্থে আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগিদেরকে জরিমানা করা প্রয়োজন এবং সমীচীন বলে কমিশন মনে করে।

যে কারণে কমিশন আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগিদেরকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। এই শাস্তির বিষয়ে সম্প্রতি চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে কমিশন।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.