প্রফিট টেকিংয়ে সূচকের পতন: বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য্য ধরতে বলছেন বিশ্লেষকরা
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: টানা দুই দিন সূচকের উত্থানে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছিল। তাই আজ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এতে পুঁজিবাজারে সেল প্রেশার বেড়ে যাওয়ায় উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে সূচকের পতন ঘটেছে বলছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, আমাদের পুঁজিবাজারের পিই রেশিও খুবই কম রয়েছে। তাই এ বাজারে এখনই বিনিয়োগের সময়। কিন্তু দুইদিন সূচক বাড়লেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা তুলে নেয়ার জন্য শেয়ার বিক্রির তোড়জোড় শুরু হয়। তাই সূচকের উত্থান ব্যহত হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের স্বল্প সময়ে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এ বাজার সামনে ভাল হবেই। এর জন্য বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য্য ধরতে হবে।
একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংক এবং ব্রোকারেজ হাউজের বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রফিট টেকিংয়ের কারণে আজ সূচকের পাশাপাশি অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। আজ সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে সিমেন্ট, নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান, তথ্য ও প্রযুক্তি, বিবিধ, সেবা ও আবাসন এবং বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো। তবে প্রফিট টেকিং প্রবণতা থাকা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বরাবরের মতো এবার বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে চলমান প্রকল্পগুলোর জন্য বড় ধরণের অর্থ বরাদ্দ থাকছে। এতে এ খাতের কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা আগের তুলনায় বাড়বে। তাই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের দিকে ঝুঁকছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায় শেষ হয় লেনদেন। এদিন শুরুতে ক্রয় চাপে সূচক বাড়লেও প্রথম ঘন্টা বিক্রয় চাপে পর টানা পড়তে থাকে সূচক। সোমবার সূচকের পাশাপাশি কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর। তবে টাকার অংকে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। আজ ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৬৩ কোটি টাকা।
সোমবার দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪৪২৩ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১০৮৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ০.৯৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৭৩৩ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩১৭টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১০৭টির, কমেছে ১৫৭ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৩ টির। আর দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৪৬৩ কোটি ৭০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।
এর আগে রোববার ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৪৪২৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১০৯১ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ২৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৭৩৪ পয়েন্টে। ওই দিন লেনদেন হয়েছিল ৪২৭ কোটি ৯৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৩৫ কোটি ৭৩ হাজার টাকা।
দিনশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮২৭৯ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৩৪টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮১টির, কমেছে ১২৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির। আজ সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ৯৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু