আজ: শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৭ জানুয়ারী ২০১৭, শনিবার |

kidarkar

সেরা সপ্তাহ অতিক্রম: ১৩ বছরের রেকর্ড ভাঙ্গলো পুঁজিবাজার

bazarশেয়ারবাজার রিপোর্ট: সদ্য বিদায়ী ২০১৬ সালটি দেশের পুঁজিবাজরের জন্য বেশ ইতিবাচক ছিল। বছরের শেষ বেলায় সাফল্যটা অর্জন করে নিতে তৎপর ছিলো সকলেই। পুঁজিবাজার উত্থানের শুরুর বছর ২০১৬ সাল হলেও। চলতি বছরের প্রথম সপ্তাহের সূচক ও লেনদেনের পরিমাণ দেখে অনুমান করা যায় ধস পরবর্তী একটি সফল বছর এটি। চলতি বছরের প্রথম সপ্তাহ লেনদেন গত ১৩ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বছরের প্রথম সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা।

তথ্যানুসান্ধানে জানা যায়, ডিএসইতে পাওয়া তথ্য অনুসারে ২০১৪ সাল থেকে শুরু করে ২০১৬ সালের প্রথম ৫ কার্যদিবসে লেনদেন ৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা অতিক্রক করতে পারেনি। বছরের প্রথম ৫ দিনের হিসেবে বিগত ১৩ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গেছে পুঁজিবাজার। এর পর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ২০১১ সাল। সে বছরের প্রথম ৫ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিলো ৬ হাজার ১৪০ কোটি ৬৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ধারাবাহিক উত্থানের কারণে দেশের শেয়ারবাজার অনেকটাই বিনিয়োগ উপযোগী হয়ে উঠেছে। ২০১৬ সাল দেশের পুঁজিবাজারের জন্য একটি ভাল বছরের সূচনা মাত্র। চলতি বছরের প্রথম সপ্তাহের সূচক ও লেনদেনের ধারাবাহিকতা দেখলে অনুমান করা যায় ধস পরবর্তী একটি সফল বছর। এ বছর শুরু থেকেই টানা সূচক ও লেনদেন বাড়তে থাকে। গোটা বাজারের জন্য এ বছরের জন্য রয়েছে অনেকগুলো শুভ খবর। প্রধানমন্ত্রীর আগমন থেকে শুরু করে জেলায় জেলায় বিএসইসির মেলা এবং সরকারের প্রবৃদ্ধি উন্নতির সাথে শেয়ার বাজারকে সম্পৃক্ত করা প্রভৃতি।

শেয়ারবাজার উন্নয়নে সম্প্রতি সরকারের নেয়া বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপ, বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিবাচক ভূমিকায় পুঁজিবাজার স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে। এরমধ্যে রয়েছে সঞ্চয়পত্র সুদের হার কমানো, ব্যাংক সুদের হার কমা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সরকারি শেয়ার অফলোডের খবর। সব মিলিয়ে বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। এ ধারা বিদ্যমান থাকলেও অচিরেই বাজার তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় বর্তমানে বাজার ভালো অবস্থায় রয়েছে। ক্ষুদ্র, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করছে। বর্তমানে মার্কেটে হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে খুব শিগগিরই এই মার্কেটে ১৫‘শো কোটি টাকার লেনদেন হবে। পাশাপাশি আসবে নতুন নতুন বিনিয়োগ। ফলে আরও গতিশীল হবে শেয়ারবাজার।

বাজার বিশ্লেষণ: সাপ্তাহিক ব্যবধানে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক উর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। সূচকের পাশাপাশি গড় লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া ৫ কার্যদিবসই বেড়েছে সূচক। আর সূচক বাড়ার মাত্রাও খুব বেশি। গড় লেনদেনর পাশাপাশি বেড়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর। আর সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে গড় লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৫৭ কোটি ৫১ লাখ ১৪ হাজার ৪০১  টাকা। আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর লেনদেন বেড়েছে ৪৬.১৯  শতাংশ।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহিক ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪৬.২০ পয়েন্ট বা ২.৯০ শতাংশ বেড়েছে। আর ডিএসইএক্স শরিয়াহ সূচক বেড়েছে ৩০.৩৩ পয়েন্ট বা ২.৫৪ শতাংশ ও ডিএসই ৩০ সূচক বেড়েছে ৫৩.৩৩ পয়েন্ট বা ২.৯৪ শতাংশ। আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩৩০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৫১টি, কমেছে ৬০টি,  অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টি  এবং লেনদেন হয়নি ২টি কোম্পানির। এগুলোর উপর ভর করে মোট ৬ হাজার ২৮৭ কোটি ৫৫ লাখ ৭২ হাজার ৯ টাকা লেনদেন হয়েছে। দৈনিক গড় হিসাবে এ লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৫৭ কোটি ৫১ লাখ ১৪ হাজার ৪০১  টাকা। যা আগের সপ্তাহে মোট ৪ হাজার ৩০১ কোটি ২ লাখ ৫৫ হাজার ৩২ টাকা লেনদেন হয়েছিল। সে হিসেবে আগের সপ্তাহের তুলনায় ডিএসইতে মোট লেনদেনের পরিমান বেড়েছে ৪৬.১৯ শতাংশ।

মোট লেনদেনের ৯২.৩৪ শতাংশ এ ক্যাটাগরিভুক্ত, ৩.৩২ শতাংশ বি ক্যাটাগরিভুক্ত, ২.৫৮ শতাংশ এন ক্যাটাগরিভুক্ত এবং ১.৭৬ শতাংশ জেড ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে হয়েছে।

এদিকে, দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসইএক্স বেড়েছে ২৭১.২১ পয়েন্ট ২.৮৯ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ২৮৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২১৬টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ৫৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির। আর সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৭১ কোটি ২ লাখ ৬২ হাজার ৭৮৪ টাকার শেয়ার।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.