পেপারের ব্যবসায় আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেল বসুন্ধরা পেপার
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পেপারেক্সের ১৩তম আসরে পুরস্কার লাভ করেছে পুঁজিবাজারে আসার অপেক্ষায় থাকা কোম্পানি বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড। সম্প্রতি শেষ হওয়া ‘পেপারেক্স-২০১৭ মেলা’য় আন্তর্জাতিক বিভাকে এই পুরস্কার পায় প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে ২০১৫ সালেও একই বিভাগে পুরস্কার পেয়েছিল বসুন্ধরা পেপার।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, ভারতের নয়া দিল্লির প্রগতি ময়দানে পেপারেক্সের ১৩তম আসরটি বসেছিল ১ থেকে ৪ নভেম্বর। পেপার, পাল্প ও এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত বিশ্বের ২২টি দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান এ মেলায় অংশ নেয়। এখানে ৬০০-এর বেশি প্রদর্শনকারী অংশগ্রহণ করে। বর্তমানে দেশে পেপার, টিস্যু ও হাইজিন পণ্যের সর্ববৃহৎ প্রস্তুতকারক বসুন্ধরা পেপার মিলস। বর্তমানে পুঁজিবাজারে আসার অপেক্ষায় থাকা এ প্রতিষ্ঠানের বিডিং ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বিডিংয়ে অংশ নেওয়া ২০ শতাংশ বিডার ৮০ টাকা বা এর ওপরে বিড করেছে। বাকি ৮০ শতাংশই বিড করেছে ৮০ টাকার নিচে। এছাড়া ৩৫ শতাংশ বিডার ২৫ টাকার মধ্যে বিড করেছে। তবে বিডিংয়ের জন্য বরাদ্দকৃত ১২৫ কোটি টাকা সর্বোচ্চ বিডিং দর থেকে ৮০ টাকার মধ্যে কভার হয়ে যাওয়ায় কোম্পানিটির কাট-অফ প্রাইস ৮০ টাকা নির্ধারিত হয়েছে।
জানা যায়, পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করা অর্থের একটি বড় অংশ দিয়ে কারখানার আধুনিকায়ন ও মেশিনারি আমদানি করবে কোম্পানিটি। যাতে ব্যয় করা হবে ১২০ কোটি টাকা। কোম্পানির তথ্য কণিকা থেকে জানা যায়, আইপিওতে উত্তোলিত অর্থ থেকে ৬০ কোটি টাকা ব্যয় হবে ঋণ পরিশোধে। কারখানার অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় হবে ছয় কোটি টাকা। ইনস্টলেশন কস্টে ব্যয় হবে তিন কোটি টাকা। যন্ত্রাংশে খরচ হবে তিন কোটি টাকা। ভূমি ও ভূমি উন্নয়নে খরচ হবে তিন কোটি টাকা, আইপিওতে খরচ হবে পাঁচ কোটি টাকা। কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য হবে ১০ টাকা। কোম্পানিটি (জানুয়ারি, ১৬-মার্চ, ১৬) সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ৮৬ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে তিন টাকা ৬৩ পয়সা এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩০ টাকা ছয় পয়সা। আর (জানুয়ারি, ১৬-মার্চ, ১৬) সময়ে শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য হয়েছে ৩০ টাকা ৯২ পয়সা।
উল্লেখ্য, গত ২৭ আগষ্ট বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৬১০তম সভায় বসুন্ধরা পেপার মিলসকে বিডিংয়ের অনুমোদন দেয়া হয়। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ২০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড। আর এটিই হবে মবিল যমুনার পর দেশের পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বড় কোন আইপিও। পাশাপাশি আইপিওতে উত্তোলিত আকারে এটি হবে তৃতীয় বৃহত্তম কোম্পানি। এর আগে ২০০৯ সালে পুঁজিবাজারে গ্রামীফোন ছয় কোটি ৯৪ লাখ ৩৯ হাজার ৪০০টি সাধারণ শেয়ার ছেড়ে ৪৮৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের সঙ্গে ৬০ টাকা প্রিমিয়ামসহ প্রতিটি শেয়ারের জন্য বিনিয়োগকারীদের পরিশোধ করতে হয় ৭০ টাকা। এরপর বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ২০১০ সালে পুঁজিবাজার থেকে ৫০৮ কোটি টাকা তোলে মবিল যমুনা বাংলাদেশ লিমিটেড।
বসুন্ধরা পেপার মিলস বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে টাকা সংগ্রহের লক্ষে গত বছরের ৩০ জুন ‘রোড শো’ সম্পন্ন করেছে। ৫০০ কোটি টাকার অনুমোদিত মূলধনের কোম্পানিটিতে ১৪৭ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন রয়েছে। কোম্পানিটি ১৯৯৭ সালে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করে। এরপরে ২০১১ সাল থেকে ২১টি দেশে পণ্য রপ্তানি করে আসছে।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ