অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা যাবে না
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তালিকাভুক্ত কোম্পানির সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতের করপোরেট গভর্ন্যান্স গাইডলাইন (সিজিজি) সংশোধন করছে। যা জনমত যাচাইয়ের জন্য প্রকাশ করা হয়েছে। কমিশনের সিজিজি-তে কোম্পানি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য কোন স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা দিতে পারবে না বলে প্রস্তাব করেছে।
ডিভিডেন্ড নীতি: কোম্পানির মুনাফা অথবা অবন্টকৃত মুনাফা থেকে ডিভিডেন্ড প্রদান করতে হবে। আন-রিয়েলাইজড গেইন, কম্প্রিহেনসিভ আয় অথবা মূলধন ভেঙ্গে ডিভিডেন্ড প্রদান করা যাবে না। ইন্টারিম অথবা অন্তর্বর্তী কালীন হিসেবে স্টক বা বোনাস ডিভিডেন্ড দেওয়া যাবে না।
কোন কোম্পানি স্টক ডিভিডেন্ড দিলে এর সুনির্দিষ্ট কারণ জানাতে হবে। পাশাপাশি স্টকের টাকা দিয়ে কী করা হবে তার বিস্তারিত প্রতিবেদন শেয়ারহোল্ডারদের জানাতে হবে।
স্বাধীন পরিচালকের সীমা: কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে প্রতি পাঁচ জনে একজন স্বাধীন পরিচালক থাকবে। তবে কোম্পানির পর্ষদে মোট পরিচালকের দুই তৃতীয়াংশের বেশি স্বাধীন পরিচালক থাকতে পারবে না। কোন কোম্পানি নির্ধারিত সীমা অনুযায়ী স্বাধীন পরিচালক নিয়োগে ব্যর্থ হয় সেক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সর্বনিম্ন সীমা অনুযায়ী কোম্পানিটির পর্ষদে স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ করবে। ব্যাংকের পর্ষদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০জন পরিচালক এবং কমপক্ষে ৩জন স্বাধীন পরিচালক থাকবে। পরিচালক ২০জনের কম হলে স্বাধীন পরিচালক কমপক্ষে ২জন থাকতে হবে।
স্বাধীন পরিচালক কোম্পানির কোন শেয়ার ধারণ করতে পারবেন না। এর আগে স্বাধীন পরিচালক সংশ্লিষ্ট কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ১ শতাংশের কম শেয়ার ধারণ করতে পারতেন।
স্বাধীন পরিচালকের সঙ্গে কোম্পানির স্পন্সর, পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা, কোম্পানি সেক্রেটারি, হেড অব ইন্টার্নাল অডিট এন্ড কমপ্লায়েন্স এবং হেড অব ইনফর্মেশন এন্ড কমিউনিকেশনের পারিবারিক সম্পর্ক থাকতে পারবে না।
স্বাধীন পরিচালক স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক, স্টেকহোল্ডার কিংবা অফিসার হতে পারবেন না।
পাঁচটির বেশি তালিকাভুক্ত কোম্পানির পর্ষদে স্বাধীন পরিচালক পদে একই ব্যক্তি থাকতে পারবেন না।
ঋণ খেলাপি, অপরাধ, শেয়ার মার্কেট ম্যানুপুলেশন ও সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের কারণে আদালতে সাজা প্রাপ্ত ব্যক্তি স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন না।
স্বাধীন পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিএসইসি এবং এজিএমে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন লাগবে। ৯০দিনের বেশি স্বাধীন পরিচালকের পদ খালী রাখা যাবে না।
একজন ব্যক্তি টানা ২মেয়াদে (ছয় বছর) স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন। এরপর এক মেয়াদ (৩বছর) বাদ দিয়ে ওই ব্যক্তি পুনরায় স্বাধীন পরিচালক হওয়ার জন্য যোগ্য হবেন।
একই ব্যক্তি একাধিক তালিকাভুক্ত কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে থাকতে পারবেন না।
অন্যান্য: কোম্পানির পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা, দন্ডাদেশ, ঋণ খেলাপি প্রভৃতি তথ্য থাকলে তা বিস্তারিতভাবে জানাতে হবে।
কোম্পানির সুশাসন নিশ্চিতের জন্য পর্ষদ কমপক্ষে পাঁচটি সাব-কমিটি গঠন করবে। কমিটিগুলো হলো: অডিট কমিটি; নমিনেশন এন্ড রিমিউনারেশন কমিটি; রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটি; এনভারনমেন্ট এন্ড স্যোশাল রেসপনসিবিলিটি কমিটি এবং এক্সিকিউটিভ কমিটি।
কোম্পানির প্রতি প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার একমাসের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। আর এ সম্পর্কিত পর্ষদ সভার তারিখ তিন কার্যদিবস পূর্বে স্টক এক্সচেঞ্জকে জানাতে হবে।
কোম্পানির অর্থবছর শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে হিসাব নিরীক্ষা করতে হবে। এবং ১৪ দিনের মধ্যে নিরীক্ষা প্রতিবেদন কমিশন ও স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হবে।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ