বিনিয়োগকারীদের জন্য ছাড় হচ্ছে ৩০০ কোটি টাকা: আবেদনের শেষ সময় ৩০ জুন
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পুন:অর্থায়নের দ্বিতীয় কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা ছাড় করছে ইনভেষ্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের এই সুবিধা পাওয়ার জন্য বিনিয়োগকারীদের নিজ নিজ সিকিউরিটিজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের চাহিদা অনুযায়ী মার্চেন্ট ব্যাংক ও সিকিউরিটিজ হাউজগুলো আইসিবিতে আবেদন করবে। আগামী ৩০ জুন আবেদনের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আইসিবি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা আনয়নে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় বিশেষ স্কীমে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য পুন:অর্থায়ন বাবদ ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। ফান্ডের নাম দেয়া হয় ‘পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল’। এই তহবিল থেকে পুন:অর্থায়নের প্রথম কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা ২০১৪ সালের জুলাই মাসে প্রদান করা হয়। প্রথম কিস্তির অর্থ বণ্টন শেষে দ্বিতীয় কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা ছাড়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পুন:অর্থায়ন তহবিলের তদারকি কমিটি আবেদনপত্র জমা দেয়। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এখন বাংলাদেশ ব্যাংক দ্বিতীয় কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা আইসিবির মাধ্যমে মার্চেন্ট ব্যাংক ও সিকিউরিটিজ হাউজগুলোকে প্রদান করবে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত মোট ১০ হাজার ৫৬৮জন বিনিয়োগকারীদের মাঝে পুন:অর্থায়নের প্রথম কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা বণ্টণ করা হয়। পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের মোট ৯০০ কোটি টাকার মধ্যে প্রথম কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক প্রদান করে। দীর্ঘ ১০ মাস পর সেই প্রথম কিস্তির তহবিল থেকে ১৫টি মার্চেন্ট ব্যাংক ও সিকিউরিটিজ হাউজকে ২৯৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে দেয়া হয়েছে ২৪৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে দেয়া হয়েছে ৫৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।
বরাদ্দ দেয়া ১৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গ্রীনল্যান্ড ইক্যুইটিকে ১ কোটি ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ৩৫ জন। আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টকে ৮৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ৪ হাজার ৩৬২ জন। বিএসএমএল ইনভেস্টমেন্টকে ৮ কোটি ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ৩৬০ জন।
আইআইডিএফসি সিকিউরিটিজকে ২০ কোটি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ৮৪৯ জন।
বাঙ্কো ফাইন্যান্সকে ২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ৫৯ জন। আইআইডিএফসি ক্যাপিটালকে ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ১৩৮ জন। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজকে ১৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ৫৯৯ জন।
জনতা ক্যাপিটালকে ৪০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ৭৯৬ জন। ফারইস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডসকে ১৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ৭৯৮ জন। আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে ৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ২৬৪ জন।
লঙ্কা-বাংলা ইনভেস্টমেন্টকে ১০ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ২৪০ জন। সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেসকে ৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ৩০০ জন। প্রাইম ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টকে ১৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ২০৬ জন।
ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) ৫৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ১ হাজার ৪৮২ জন। সর্বশেষ জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানি বাংলাদেশকে ৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন ৮০ জন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র এবং তদারকি কমিটির আহবায়ক মো.সাইফুর রহমান শেয়ারবাজার নিউজ ডটকমকে জানান,পুন:অর্থায়ন তহবিলের প্রথম কিস্তির টাকা সুষ্ঠুভাবে বণ্টণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির ৩০০ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে মার্চেন্ট ব্যাংক ও সিকিউরিটিজ হাউজগুলোকে পুন:অর্থায়নের দ্বিতীয় কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা পেতে আবেদন করতে হবে বলে জানান তিনি।
শেয়ারবাজারনিউজ/সা