পঞ্চমবারের মতো শিরোপা জিতলো অস্ট্রেলিয়া
শেয়ারবাজার ডেস্ক: একাদশতম বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিলান্ডের অবলম্বন ছিল সাম্প্রতিক সময়ে করা দুরুন্ত ফর্ম। তবে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে এসে শিরোপা ছুঁতে পারেনি কিউই শিবির। ঘরের মাঠ মেলবার্নের প্রায় নব্বই হাজার দর্শককে উৎসবে মাতিয়ে একাদশ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের শিরোপা জিতেছে সেই অস্ট্রেলিয়াই।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের বিদায়ী ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখলেন অসি দলনেতা মাইকেল ক্লার্ক। দেশকে শিরোপা উপহার দিয়েই বিদায় নিলেন ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে, এর চেয়ে ভালো উপলক্ষ্য আর কি হতে পারে তার জন্য।
রোববার মেলবোর্নে বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে সাত উইকেটে পরাজিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে অসি পেসারদের আগুণ ঝড়ানো বোলিংয়ে নাস্তানাবুদ নিউজিল্যান্ড। ৪৫ ওভারে ১৮৩ রানে অল আউট কিউই শিবির। ব্যাট হাতে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি কেউ। একমাত্র টেইলর(৪০) ও এলিয়ট (৮৩) যা করার করেছেন। জবাবে অস্ট্রেলিয়া শুরুতে উইকেট হারালেও জয়ের বন্দরে পৌছায় তিন উইকেট হারিয়ে ১০১ বল হাতে রেখেই।
বিশ্বকাপে রেকর্ড পঞ্চম শিরোপা এটি অস্ট্রেলিয়ার। চতুর্থ শিরোপা অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল ২০০৭ সালে শ্রীলংকাকে হারিয়ে রিকি পন্টিংযের নেতৃত্বে। তবে সপ্তম প্রচেষ্টায় সেমির গন্ডি পার হয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে আসতে পারলেও শিরোপা জয়ের স্বপ্নটা স্বপ্নেই থেকে গেল ব্রেন্ডন ম্যাককালামদের।
আলোচনা ছিল তুঙ্গে। মেলবোর্নে হলুদ উৎসব হবে নাকি কালোর? কার বিদায়ী ম্যাচ হবে রঙিন, ক্লার্কের না ড্যানিয়েল ভেট্টরির। শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি ক্লার্কেরই। হতাশ, মলিন চেহারায় মাঠ ছাড়লেন ভেট্টরি। তারপরও নিউজিল্যান্ডের হয়ে প্রথমবারের মতো ফা্ইনাল খেলার গর্বটা অনেকদিন করতে পারবেন তিনি। এটা শুধু ভেট্টরি নয়, গোটা কিউই শিবিরেরই।
জয়ের জন্য লক্ষ্য ১৮৪ রান।শুরুতেই ফিঞ্চের উইকেট হারালেও তা সামলে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ওপেনার ওয়ার্নার করেন ৪৫ রান। হেনরির বলে ওয়ার্নার বিদায় নিলে জয়ের জন্য বাকি কাজটুকু সারেন অধিনায়ক ক্লার্ক ও স্টিভেন স্মিথ। জয়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে ৭৫ রানে আউট হন ক্লার্ক। বিদায়ী ম্যাচ বলেই যখন সাজঘরে ফিরছিলেন, অশ্রুসজল চোখ ছিল তার। তবে শিরোপা জয়ের উচ্ছাসে সব বেদনা উবে গেছে অসি দলপতির। শেষ পর্যন্ত বাউন্ডারি হাকিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের বন্দরে পৌছে দেন স্টিভেন স্মিথ।
এর আগে প্রথম ওভারে ভালোয় ভালোয় টিম সাউদিকে মোকাবেলা করেন দুই ওপেনার অ্যারোন ফিঞ্চ আর ডেভিড ওয়ার্নার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে আসেন এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা বোলার ট্রেন্ট বোল্ট। এসেই চতুর্থ বলে তুরে নিলেন অ্যারোন ফিঞ্চের উইকেট। বোল্টের দুর্দান্ত ইনসুইঙ্গারটি বুঝতেই পারেননি ফিঞ্চ। ব্যাট-প্যাডে লেগে বলটি উঠে যায় আকাশে। উইকেটের ওপরেই ছিল। খুব সহজে নিজের বলে নিজে কাচটি লুপে নিলেন বোল্ট। পতন ঘটলো অস্ট্রেলিয়ার প্রথম উইকেট।
শুরুতে উইকেট হারালেও অসিদের মোটেও ভয় পাইয়ে দিতে পারেননি কিউই বোলাররা। উল্টো তাদের ওপর যেন চড়ে বসেছেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং টপ অর্ডার স্টিভেন স্মিথ। দু’জন মিলে একের পর এক কিউই বোলারদের পাঠাচ্ছেন মাঠের বাইরে। শেষ পর্যন্ত ১০.৪ ওভার খেলে ৬১ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হন দু’জন।
১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ম্যাচ হেনরির বল পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন ওয়ার্নার। গ্র্যান্ট এলিয়টকে ক্যাচটি তালুবন্দী করতে মোটেও কষ্ট করতে হয়নি। ৪৬ বলে ৭টি বাউন্ডারিতে ৪৫ রান করে আউট হলেন ওয়ার্নার।
শেয়ারবাজার/অ