সাপ্তাহিক বাজার: লেনদেন বেড়েছে ৩০.৪৬ শতাংশ
শেয়ারবাজার রিপোর্টঃ সপ্তাহিক ব্যবধানে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক ও লেনদেনে ইতিবাচক প্রবণতা বিরাজ করছে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ৩দিনই বেড়েছে সূচক। বাকি দুই কার্যদিবস কমলেও এর মাত্রা ছিলো সামান্য। এরই ধারাবাহিকতায় ডিএসইতে সব ধরনের সূচক বেড়েছে। এদিকে সূচক বাড়লেও কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। তবে গত সপ্তাহে লেনদেনের পরিমান বেড়েছে। আলোচিত সপ্তাহটিতে লেনদেন বেড়েছে ৩০.৪৬ শতাংশ।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত সপ্তাহে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শেয়ারে ব্যাপক উত্থান ঘটেছে। এর জেরে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমলেও সূচক বেড়েছে। মূলত আর্থিক খাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আচরণ বিধি জারি করায় ব্যাংকের প্রতি বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক দেখা গেছে। নতুন বছরের ১ জানুয়ারি থেকে সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট আচরণ বিধি মেনে চলতে হবে। এছাড়াও, সপ্তাহজুড়ে বিভিন্ন কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা, আর্থিক প্রতিবেদন সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। আর এতে যেসব কোম্পানির মুনাফা তথা ইপিএস ভালো এসেছে সেসব শেয়ারের দর বাড়ছে। এছাড়ও ব্যাংক ও আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা আনার খবরেও এসব সেক্টরে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বাড়ছে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীরাও অস্থিরতা এবং ডে-ট্রেডিং মনোভাব ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠছেন। ফলে পুঁজিবাজার কিছুটা গতিশীল হচ্ছে। তবে আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে পুঁজিবাজার অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এ জন্য বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিতে হবে। তাই সব মহলকে আরও বেশী সক্রিয় হতে হবে বলেও মনে করছেন তারা।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সঞ্চয় পত্রে সুদের হার কমাতে সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি ঋণ পুন:তফসিল করার শর্ত শিথিল করা হবে বলে আভাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ পুঁজিবাজারে ঝুঁকবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা।
সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স বা ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ বা ৮৮ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই৩০ সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ বা ৩৫ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট। অপরদিকে, শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ বা ৩৪ দশমিক ১৬ পয়েন্টে। আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩৮টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩৫টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১৮৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির। আর লেনদেন হয়নি ১টি কোম্পানির শেয়ার। এগুলোর ওপর ভর করে গত সপ্তাহে লেনদেন মোট ৪ হাজার ৬৮৪ কোটি ৯৯ লাখ ৪০ হাজার ৭৩৮ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। তবে এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩ হাজার ৫৯১ কোটি ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৬৪৪ টাকার। সেই হিসাবে সমাপ্ত সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছে ১ হাজার ৯৩ কোটি ৩৮ লাখ ৮ হাজার ৯৪ টাকা বা ৩০ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
আর সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯০ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
সপ্তাহশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সেচঞ্জের (সিএসই)সার্বিক সূচক সিএসইএক্স ১৫১ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বা ১.৩০ শতাংশ বেড়ে সপ্তাহ শেষে দাঁড়িয়েছে ১১৭৬৯ পয়েন্টে। আর সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে হাত বদল হওয়ার ২৮০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৬টির, কমেছে ১৫৩টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির দর। এগুলোর ওপর ভর করে বিদায়ী সপ্তাহে ৩০৭ কোটি ৭ লাখ ৭২ হাজার ৪৯১ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু