আজ: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ জুন ২০১৫, রবিবার |

kidarkar

দইয়ের গুনাগুন

দইশেয়ারবাজার ডেস্ক: দই অনেকেরই প্রিয় খাবার। গবেষণায় দেখা  গেছে, প্রতিদিন দই খেলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে। এছাড়াও সর্দি-জ্বর এড়াতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, ওজন হ্রাস ও হজমের সহায়তায় দইয়ের বিকল্প নেই। দই হৃদরোগের ঝুঁকি দূর করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতেও দইয়ের জুড়ি নেই।

প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি ও খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ দই তৈরির প্রণালী ও উপকরণ এক নয়। কোন দইয়ে কী পরিমাণ ক্যালরি বা ফ্যাট রয়েছে এবং কোন ধরনের দই শরীরের পক্ষে কতটা উপকারি তা অনেকেরই অজানা। চলুন জেনে নেওয়া যাক দয়ের উপকারীতা সম্পর্কে…..

গরুর দুধের দই
বাজারের বেশিরভাগ দই গরুর দুধ দিয়ে তৈরি। সাধারণত এ ধরনের দইয়ে ফ্লেভার বা চিনি থাকে না। ব্রিটেনের ডায়েটেশিয়ান ডক্টর সারা সেনকার জানান, চিনিবিহীন প্রাকৃতিক দই খাওয়ার পরামর্শই আমি দেই। আপনি চাইলে আলাদা চিনি, মধু বা ফল মিশিয়ে খেতে পারেন।
ফ্যাট সমৃদ্ধ ১০০ গ্রাম দইয়ে রয়েছে প্রায় ৮২ কিলোক্যালরি, লো ফ্যাট দইয়ে রয়েছে ৫৬ কিলোক্যালরি ও ফ্যাটবিহীন দইয়ে রয়েছে ৫৪ কিলোক্যালরি। এই তিন ধরনের দইয়ের প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে পাঁচ গ্রাম প্রোটিন।
ফ্যাট সমৃদ্ধ দইয়ে রয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ ফ্যাট। এটি দীর্ঘ সময় ক্ষুধা নিবারণ করে ও ধীর গতিতে খাবার হজম করে।

গ্রিক ইয়োগার্ট
গ্রিক ইয়োগার্ট তৈরির সময় দুধ থেকে অতিরিক্ত চিনি, ল্যাক্টোজ, মাঠা ছেঁকে নেওয়া হয়। তাই এটি বেশি পুরু, ক্রিম ও প্রোটিন সমৃদ্ধ। একশ’ গ্রাম গ্রিক ইয়োগার্টে রয়েছে ৯৬ থেকে ১৩০ কিলোক্যালরি।

প্রোটিন সমৃদ্ধ দই
এক নাগাড়ে কয়েকটি ছাঁকন প্রক্রিয়ায় এ দই তৈরি করা হয়। সাধারণ দইয়ের তুলনায় এ দই তৈরিতে চারগুণ বেশি দুধ ব্যবহার করা হয়। বলা যায়, ফ্যাটবিহীন দইয়ের মধ্যে এটি একটি। প্রতি ১০০ গ্রাম দইয়ে থাকে মাত্র ০.২ গ্রাম ফ্যাট।
এটি অন্যান্য দইয়ের তুলনায় অপেক্ষাকৃত ভারী, ক্রিম ও উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ। ১০০ গ্রাম প্রোটিনে থাকে ৬৫ কিলোক্যালরি। আর এ দইয়ে রয়েছে প্রায় ১১ গ্রাম প্রোটিন। যার পুষ্টিগুণ একটি মুরগির অর্ধেক বুকের মাংসের সমান।

ছাগলের দুধের দই
গরুর দুধের চেয়ে ছাগলের দুধে রয়েছে বেশি পরিমাণ ক্যালসিয়াম। ১০০ গ্রাম গরুর দুধে তৈরি দইয়ে ক্যালসিয়াম থাকে ১৫০ মিলিগ্রাম। সেখানে ১০০ গ্রাম ছাগলের দুধে তৈরি দইয়ে রয়েছে ২৪০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। যা কি না হাড় ও দাঁতের জন্য অত্যন্ত জরুরি ‍উপাদান। ফ্যাট সমৃদ্ধ ১০০ গ্রাম ছাগলের দুধে তৈরি দইয়ে রয়েছে ৭.৩ গ্রাম ফ্যাট আর ফ্যাটবিহীন দইয়ে রয়েছে ৪২ ক্যালরি।

নারকেলের দুধে তৈরি
নারকেলের দুধ দিয়েও দই তৈরি হয়। এতে রয়েছে উচ্চমানের ফাইবার, ভিটামিন সি, ই, বি১, বি৩, বি৫, বি৬, খনিজ উপাদানসহ লোহা, সেলেনিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস। প্রতি ১০০ গ্রাম দইয়ে রয়েছে ১৯ গ্রাম ফ্যাট। যার ১৭ গ্রামই স্যাচুরেটেড (পানিতে দ্রবণীয়) ফ্যাট। নারীদের দৈনিক এ ফ্যাট গ্রহণের মাত্রা ২০ গ্রাম। তবে নারকেলের দুধের এ ফ্যাট শরীরে জমা না হয়ে বিপাকক্রিয়ার মাধ্যমে সহজেই শক্তিতে পরিণত হয়।

সয়া দই
গবেষণায় দেখা গেছে, সয়া দই প্রিমিনস্ট্রুয়াল সিনড্রম, মেনোপোজের লক্ষণজনিত সমস্যা ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের উৎস এ দই কম ক্যালরি সমৃদ্ধ। প্রতি ১০০ গ্রাম দইয়ে রয়েছে ৪৬ ক্যালরি ও ফ্যাট ২.৬ মিলিগ্রাম।

প্রোবায়োটিক দই
আল্ট্রা হাই টেম্পারেচার (উচ্চ তাপমাত্রায় তৈরি) দই ছাড়া সব দইতেই শরীরবান্ধব ব্যাকটেরিয়া থাকে। তবে হজমের সময় পাকস্থলির এসিডের মাধ্যমে এই ব্যাকটেরিয়ার বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে যায়। তবে কোনো কোনো দইয়ে স্থিতিস্থাপক বিফিডো ব্যাক্টেরিয়া ও ল্যাক্টোবাসিলাস এসিডোফিলাস ব্যাকটেরিয়া শরীরে থেকে যায়। যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, প্রদাহ কমায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অনেক সময় বিভিন্ন খাদ্য উপাদান ও এন্টিবায়োটিক সেবনের ফলে এসব ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে দই খাওয়া যেতে পারে। তবে ডক্টর সেনকার জানান, সুস্থ অবস্থায় প্রোবায়োটিক দই প্রতিদিন না খেলেও চলে।

অপাস্তুরিত দই খাওয়া কি নিরাপদ?
দই তৈরির সময় দুধ জ্বাল দিয়ে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলা হয়। তারপর শরীরবান্ধব ব্যাকটেরিয়ার সংমিশ্রণে তৈরি হয় দই। কখনও কখনও পাস্তুরিত (উত্তাপ ছাড়া) না করেই দই তৈরি হয়। এসব দই বেশিরভাগ মানুষের ওপরই ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না। তবে গর্ভবতী ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিরা চাইলে এড়িয়ে চলতে পারেন।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.