আজ: শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪ইং, ২৭শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৫ মার্চ ২০২৪, মঙ্গলবার |

kidarkar

পুঁজিবাজারকে বৃহত্তর পরিসরে উপস্থাপন করাই ডিএসইর লক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের সার্বিক অর্থনীতির উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু সার্বিক পুঁজিবাজার নিয়ে গর্ব করার মত উচ্চতায় পৌঁছতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান।

ডিএসই টাওয়ার, মাল্টিপারপাস হলে দুদিন ব্যাপী (৪ ও ৫ মার্চ) ট্রেকহোল্ডারস কোম্পানির প্রতিনিধি, অনুমোদিত প্রতিনিধি এবং কমপ্লায়েন্স অফিসারদের জন্য “সিকিউরিটিস রিলেটেড ল’স এবং ‘এফেক্টিভ কম্প্লায়েন্সেস অফ সিকিউরিটিস রিলেটেড ল’স” শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা জোরদার করা, সুশাসন সংহতকরণ এবং সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে রূপকল্প ২০৪১ এর যথাযথ বাস্তবায়নে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বার্ষিক কর্মসম্পাদনের অংশ হিসেবে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

ডিএসই’র জেনারেল ম্যানেজার মোঃ ছামিউল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান একটি চলমান প্রক্রিয়া। সচেতনতার মাধ্যমে ইনফরমেশন গ্যাপ কমিয়ে সুশাসন ও উন্নয়নের একটি কালচার তৈরি করা যায়। একটি ব্রোকার হাউজের কি কি বিষয় পরিপালন করতে হবে তা জানা যায়। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার জন্য রেগুলেশন-এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়৷ তাছাড়াও সংশ্লিষ্ট আইন কানুন পরিপালনে সহায়ক ভূমিকা রাখেন। ব্রোকার-ডিলার, ট্রেকহোল্ডার, কোম্পানি থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রেই সুশাসন তৈরি করা এবং বিধি-বিধান পরিপালন করা অত্যন্ত জরুরি। এই কর্মশালার বিষয়বস্তু অত্যন্ত সময়োপযোগী। সিকিউরিটিজ হাউজকে পরিচালনা করতে আইনকানুনগুলো কিভাবে প্রতিপালন করা যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে আজকের এই আলোচনা। পুঁজিবাজারে প্রচুর আইনকানুন হয়েছে। আইনকানুন ঠিকমতো পরিপালন না করলে পুঁজিবাজারে সু-শাসন নিশ্চিত হবে না।

তিনি আরও বলেন, “বিএসইসি নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে বিভিন্ন আইন-কানুন, বিধি-বিধান প্রণয়ন করে থাকে, আমাদের এই আইন-কানুন, বিধি-বিধান পরিপালন করতে হয়। পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি ট্রেকহোল্ডারদের এবং অনুমোদিত প্রতিনিধিদের দক্ষতার উপর নির্ভর করে। কারণ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আপনাদের কাছেই আসে। আপনারাই হচ্ছেন পুঁজিবাজারের গেটকিপার। কমিশন এবং এক্সচেঞ্জের সাথে তাদের সরাসরি যোগাযোগ খুবই কম হয়। তাই আপনারা বিনিয়োগকারী এবং এক্সচেঞ্জের মধ্যে ব্রীজ বা সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেন। যদি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বজায় রাখতে পারেন, তবে কমিশন এবং এক্সচেঞ্জ উভয়ই নিশ্চিত থাকতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখার মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে বৃহত্তর পরিসরে উপস্থাপন করাই হচ্ছে ডিএসইর লক্ষ্য। এখানে যারা উপস্থিত আছেন সকলেই আর্থিক খাতের লোক। দেশের সার্বিক অর্থনীতির উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু সার্বিক পুঁজিবাজার নিয়ে গর্ব করার মত উচ্চতায় পৌঁছতে আরও সময় লাগবে। তাই আমাদের অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে।

ড. তারিকুজ্জামান বলেন, আইনে যে মনিটরিং এবং এনফোর্সমেন্ট করতে বলা হয়েছে সেটা পালন করা সকলের দায়িত্ব এবং সঠিকভাবে প্রতিপালন/পরিপালন করতে পারেন। যে রুলস, রেগুলেশনগুলো এসেছে, আমাদের উদ্দেশ্য হল কর্মশালার মাধ্যমে আপনাদের এই রুলস এবং রেগুলেশনগুলো জানানো যাতে আপনারা ভুলগুলো সংশোধন করে এই সমস্যাগুলো থেকে উত্তরণের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং অবদান রাখতে পারেন।

ট্রেকহোল্ডারদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান সিপিএ বলেন, বেশ কিছু রুলস রেগুলেশন বিষয়ে ইতোমধ্যেই বিএসইসিতে মতামত পাঠানো হয়েছে এবং বেশ কিছু প্রস্তাবনা আমাদের হাতে আছে যা আমরা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্টকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করছি। আগামীতে পর্যালোচানা শেষে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে বিবেচনার জন্য পাঠানো হবে। আমরা আশ্বস্ত করতে চাই যে, পুঁজিবাজারকে সামনের দিকে এগিয়ে দিতে এবং পুঁজিবাজার উন্নয়নের জন্য যা যা করা দরকার আমরা তা করবো। আমরা সকলে একসঙ্গে মিলিত হয়ে কাজ করবো।

ডিএসইর জেনারেল ম্যানেজার মোঃ ছামিউল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে পেপার উপস্থাপন করেন ডিএসইর প্রধান রেগুলটরি কর্মকর্তা খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ। সিকিউরিটিজ আইন প্রতিপালনের প্রয়োজনীয়তা এবং লঙ্ঘনের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, এই অধিবেশনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো- বিনিয়োগকারীদের তহবিলের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বিনিয়োগকারীদের সিকিউরিটিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সিকিউরিটিজ সংক্রান্ত নিয়ম মেনে চলা নিশ্চিত করা, ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিগুলির এমডি, সিইও এবং কমপ্লায়েন্স কর্তৃপক্ষের সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

পেপার উপস্থাপনায় বেশ কিছু অসম্মতিও তুলে ধরেন তিনি। এর মধ্যে, কনসোলেটেড কাস্টমার অ্যাকাউন্টে ঘাটতি, ক্লায়েন্টদের সিকিউরিটিজে ঘাটতি, একাধিক ব্যাকঅফিস সফটওয়্যারের ব্যবহার, শাখা, ডিজিটাল বুথ, এক্সটেনশন অফিসের অননুমোদিত কার্যক্রম, কমিশন বা ডিএসইকে না জানিয়ে শাখা, ডিজিটাল বুথ, এক্সটেনশন অফিস বন্ধ-স্থানান্তর, ডিএসইতে রিপোর্ট না করে ইন-চার্জ বা কমপ্লায়েন্স অফিসার অনুমোদিত প্রতিনিধিদের পরিবর্তন, টিডব্লিউএসের অননুমোদিত ব্যবহার ইত্যাদি।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.