পাকিস্তানের বিপক্ষে সাকিবরা প্রস্তুত
শেয়ারবাজার ডেস্ক: আগামিকাল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের সিরিজ। এ সিরিজে ৩ টি ওয়ানডে, ১ টি-২০ ও ২টি টেস্ট ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ- পাকিস্তান। আইপিএল থেকে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে দুই ম্যাচ খেলে ঢাকা ফিরেছেন আরও দু’দিন আগে সাকিব। মাশরাফিদের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন তিনি গতকাল। বৃহস্পতিবার অনুশীলন শুরুর আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রথম ম্যাচের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সংবাদ সম্মেলনে এসে সাকিব বললেন, ‘এবার আমাদের সেরা সুযোগ পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের। এ সুযোগটা কাজে লাগাতে চাই।’
নিজেদের সেরা মনে করচ্ছেন সাকিব আল হাসান।কিভাবে নিজেদের সেরা মনে করছেন এ বিষয়ে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার বলেন, ‘নিজেদের সেরা মনে হওয়ার একটা বড় কারণ হচ্ছে, বিশ্বকাপে আমাদের পারফরম্যান্স। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মতো দেশে ভালো ক্রিকেট খেলেছি। ভালো অবস্থায় ছিলাম। আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়েছে। এ কারণেই এবার আমাদের মনে হচ্ছে, পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের সেরা সুযোগ আমাদের সামনে। এছাড়া, পাকিস্তান নিজেদের সেরা ফর্মে নেই। এ কারণে সিরিজ জয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে আমাদের সামনে।’
পাকিস্তানকে বড় হিসেবে ধরছেন না বিষয়ে জানতে চাইলে সাকিব বলেন, ‘না, সেভাবে আসলে ছোট করে দেখার মতো দল তো নয় পাকিস্তান। এই দলটিতে এখনও অনেক ম্যাচ উইনার ক্রিকেটার রয়েছেন। ভালো ব্যাটসম্যান আছেন, ভালো বোলার আছেন। সুতরাং, পাকিস্তান যে এখনও শক্তিশালি সেটা বলাই যায়।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের মূলমন্ত্র কী/ কী পরিকল্পনা নিয়ে সিরিজ শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ তা নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম ম্যাচটার ওপরই অনেক কিছু নির্ভর করছে। শুরুটা যদি আমাদের ভালো হয়, তাহলে পুরো সিরিজে ভালো খেলতে পারবো আমরা। আমি আশাবাদী, শুরুটা ভালো করতে পারবো। পাকিস্তানও অনেক শক্তিশালি একটি দল। তবে, আমরা প্রস্তুত পাকিস্তানের বিপক্ষে এবার নিজেদের সেরাটা ঢেলে দেওয়ার জন্য।’
অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাটিতে খেলে এসেছেন। হোম কন্ডিশনে খেলতে কী তাহলে কোন সমস্যা হবে কি এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কী মনে হয়? দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে দেশে আসার পর নিজের বাসাকে কী পর মনে হয় কারও? আসলে যতই বিদেশে খেলি না কেন, নিজের দেশ, নিজের মাঠ তো কখন অপরিচিত হয়ে ওঠে না। দেশ দেশই।’
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভালো করার কারণের উপর তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপে বাংলাদেশের এত ভালো করার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো, কয়েকজন তরুন ক্রিকেটার নিজেদের মেলে ধরতে পেরেছে তাই। ইয়াং প্লেয়াররা ভালো করলে, সব সময়ই ভালো কিছু ফল আসবে এটা স্বাভাবিক। পাকিস্তানও তো বিশ্বকাপে শেষ দিকে ভালো করেছে। ওয়াহাব রিয়াজের সেই বোলিং স্পেল তো অনেক আলোচিত। দলটিতে ম্যাচ বের করে নেওয়ার মত অনেক ক্রিকেটার রয়েছে।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের জন্য কী কী করা প্রয়োজন? এ বিষয়ে সাকিব বলেন, জিততে হলে কোন নির্দিষ্ট এক ডিপার্টমেন্টে নয়, ব্যাটিং-বোলিং এবং ফিল্ডিং- তিন ডিপার্টমেন্টেই ভালো করতে হবে। তাহলেই ভালো কোন ফল আসবে।’
প্রস্তুতি ম্যাচের ফল কোন কাজে আসবে কি না? জানতে চাইলে সাকিব বলেন, ‘প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশ পাকিস্তানকে হারিয়েছে, এটা আমাদের জন্য মানসিক একটা শক্তি। ওই ম্যাচে জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন খেলেছেন। তারা পাকিস্তানকে হারানোর অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন দলের বাকিদের সঙ্গে। আর একটা প্রস্তুতি ম্যাচ জিতে শুরু করা গেলে, সেটা দলের জন্যই অনেক ভালো একটি ব্যাপার।’
পাকিস্তানের বিশ্বসেরা স্পিনার সাঈদ আজমল অ্যাকশনের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সাকিব বলেন, ‘আসলে তিনি তো আগে একরকম ছিলেন। সেটার সঙ্গে আমরা পরিচিত। এবার অ্যাকশন বদলে ফেলেছেন। নতুন রূপে তিনি কেমন সেটা তো দেখিনি। খেলা শুরুর পর তার কয়েকটা ওভার গেলেই বুঝতে পারবো, কতটা চ্যালেঞ্জের হতে পারেন তিনি।’
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ১৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটি। এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডেটি হবে ১৯ ও ২২ এপ্রিল একই ভেন্যুতে। ওয়ানডে সিরিজের পর ২৪ এপ্রিল একমাত্র টি২০ ম্যাচটিও একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম টেস্ট শুরু হবে ২৮ এপ্রিল খুলনা শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে। এরপর ০৬ মে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ শুরু হবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ।
জানা গেছে, সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ পূর্নাঙ্গ সিরিজ খেলবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টোডিয়াম এবং খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে। যদিও এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এই সিরিজের কয়েকটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই ভেন্যুতে এই সিরিজের কোনো ম্যাচই অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।
শেয়ারবাজার/রা